বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত (১৮৮৫-১৯৬৫)
আলিপুর বোমার মামলায় প্রাণদন্ডাদেশ শোনার পর বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত বিনম্রভাবে একটি #গান গাইবার অনুরোধ করেছিলেন “মহামান্য” আদালতের কাছে। তাঁকে সে অনুমতি দেওয়াও হয়েছিল। আদালত কক্ষে দাঁড়িয়েই গলা ছেড়ে গেয়ে উঠেছিলেন রবীন্দ্রনাথের “সার্থক জনম আমার, জন্মেছি এই দেশে…”।
ব্রিটিশ নিম্নআদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শোনবার পর উচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসির আদেশ রদ করে দেওয়া হয় এবং ১৯০৯ সালের ২৩শে আগস্ট বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের আদেশ শোনানো হয়।
আন্দামানের সেলুলার জেল: স্বাধীনতা সংগ্রামী-বিপ্লবীরা এখানেই তাঁদের নারকীয় যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করতেন (Photo by Author)
আন্দামানের সেলুলার জেল (Photo by Author)
আন্দামানের সেলুলার জেলের ভিতরে উল্লাসকরের প্রতিকৃতি (Photo by Author)
কালাপানি ও অন্যান্য ব্রিটিশ জেলের কবল থেকে মুক্ত হবার পর এই মহান বিপ্লবী অসুস্থাবস্থায় বেশ কিছুকাল চুপচাপ জীবন নির্বাহ করেন। পরবর্তীকালে দেশপ্রেমী বিপিনচন্দ্র পালের মেয়ে লীলা পালকে বিয়ে করেন।
লীলার সঙ্গে উল্লাসকরের পরিচয় বহুদিনের। সেলুলার জেলে থাকাকালীন তাঁদের মধ্যে চিঠি চালাচালিও হতো। লীলা লন্ডন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে অন্য একজনকে বিয়ে করেন। উল্লাসকর কোনোদিনই সেই বিয়েটাকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারেন নি। দেশভাগের পরে লীলা বিধবা হওয়ার পরে তাই উল্লাসকর তাকে বিয়ে করেন।
লীলা পালের অর্ধেক শরীর তখন পক্ষাঘাতগ্রস্থ। তবুও, রূপে নয়, লীলা তাঁর চিরন্তন ভালোবাসায় ভোলালেন উল্লাসকরকে।
বিয়ে করে দুজনে একসঙ্গে জীবনের শেষ কটা বছর কাটালেন আসামের শিলচরে। খেয়াল করতে হবে যে উল্লাসকর দত্ত ভারত বা পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা প্রদত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামী ভাতা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
তাই বেঁচে থাকুক #বিপ্লব,
আর বিপ্লবের মধ্যে দিয়েই বেঁচে থাকুক সেই #অপরাজেয়_ভালোবাসা…
***আগ্রহী পাঠক-পাঠিকারা উল্লাসকরের “আমার কারাজীবন” বইটি পড়ে দেখতে পারেন.***
@Com. Akhar
09-05-2018